www.foyez.page.tl
   
 
  NEWS

 

bddlgroup

খালেদা আসতেন, যদি স্লোগান হতো ‘লুটবো সম্পদ হবো ধনী’

ঢাকা, ১৭ অক্টোবর
দারিদ্র নিরসন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার না আসার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতীয় ঐক্য রুখবে দারিদ্র’ এই স্লোগান বোধহয় ওনার (খালেদা জিয়া) পছন্দ হয়নি। তিনি আসতেন যদি স্লোগানটা হতো ‘লুটবো সম্পদ হবো ধনী’ তাহলে তিনি আসতেন।

যে ব্যাক্তি এতিমদের (জিয়া অরফানেস্ট ট্রাষ্ট) টাকা মেরে খেয়ে ধনী হতে পারে তিনি কিভাবে দরিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার কথা বলেন?

বিরোধী দল বিএনপিকে সংসদে আসার অাহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনার সংসদে আসেন, বসেন এবং জনগনের সমস্যা সমাধান নিয়ে কথা বলেন।  

এ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার যোগ না দেয়ার ব্যাপারে বলেন, কোটি কোটি জনগনের সমস্যা নিয়ে যিনি এরকম একটি সম্মেলনে আসতে পারেন না কারণ তার দুটি সিটের (সংসদীয় আসন) সমস্যা আছে। জনগনের সমস্যার চাইতে তার দুটি সিট বেশি গুরুত্বপূর্ন বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিরোধী দল বিএনপির সংসদে আসন বাড়ানোর বিষয় সমন্ধে সমালোচনা করে বলেন, ২০০১ সালে আমরা ৬২ আসন নিয়ে সামনের সারিতে ৫টি আসন বরাদ্দ পেয়েছিলাম। অথচ বিএনপি মাত্র ২৭টি আসন পেয়ে সামনের সারিতে তাদেরকে ৫টি আসন দিয়েছি। আমরা যেখানে ৬২ আসন পেয়ে সামনের সারিতে ৫টি আসন পাই সেখানে বিএনপি ২৭টি আসন পেয়ে কিভাবে সামনের সারিতে ৭টি আসন দাবি করে।

একইসাথে তিনি সাবেক স্পীকারের সমালোচনা করে বলেন, আমি বিরোধী দলে থাকার সময় আমার মাইক ৭২ বার বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এবার আমাদের স্পীকার বিরোধী দলীয় নেত্রীর বক্তব্যর সময় মাইক বন্ধ করে দেয়া তো দূরের কথা একটি বারও বলেননি আপনার সময় শেষ হয়ে গিয়েছে।






বাংলাদেশ এখন কিডনির জমজমাট বাজার

কাজী সায়েমুজ্জামান :
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিডনি রোগ বিভাগের দেয়ালে কিডনি বিক্রির জন্য কমপক্ষে ২০টি বিজ্ঞাপন শোভা পাচ্ছে। এর একটি বিজ্ঞাপনে লেখা হয়েছে- একজন অসহায় মেয়ে আর্থিক কারণে তার কিডনি বিক্রি করবে। তার রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ। বয়স ১৯ থেকে ২০ বছর। যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল ফোন নম্বর ০১৭১৪৭৪৮৯৪২ দেয়া হয়েছে।
আরেকটি বিজ্ঞাপন লাগানো হয়েছে স্টিকার আকারে। এতে বলা হয়েছে জরুরী ভিত্তিতে একটি বি পজেটিভ কিডনি বিক্রি করা হবে। রক্তের গ্রুপ বি পজেটিভ। এ জন্য মোবাইল ফোন নম্বর ০১৯২১১৩১৪৭৫৯ দেয়া হয়েছে। আরেকদিকে সম্প্রতি স্যাটেলাইট চ্যানেলে একটি বি পজেটিভ কিডনি চাই বলে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন হাজারীবাগের এমবি ট্যানারীর ব্যবসায়ী আজিজুর রহমান। যোগাযোগের জন্য তিনি দুটি মোবাইল ফোন নম্বর ০১৯১৩৩৭৩২৯২ এবং ০১৭৩২৯৪০১০৬ দিয়েছেন। তিনি ধানমন্ডির কিডনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হারুন অর রশীদের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এমনকি বেশকিছু জাতীয় পত্রিকায় এধরনের বিজ্ঞাপন চোখে পড়ছে। খোঁজ নিয়ে রাজধানীতে কিডনি বিক্রির একটি বিশাল বাজারের সন্ধান পাওয়া গেছে। আগে কিডনির দাম ছিল আকাশছোয়া। টাকা দিয়েও মিলেনি তা। বর্তমানে প্রতুলতার কারণে এর দামও পড়ে গেছে। এখন মাত্র দুই লাখ থেকে আড়াই লাখ টাকায় মিলছে কিডনি। দালালরা অনেক বিক্রেতার কিডনির এইচএলএ রিপোর্ট তৈরী করে রাখেন। রোগীর সঙ্গে মিলে গেলেই এক ঘন্টার মধ্যে মিলে যায় তরতাজা কিডনি। এভাবে প্রতিদিনই বিক্রি হয় মানব দেহের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ। কয়েকমাস আগেও এর রমরমা বাজার ছিল ভারতের কলকাতা। গত ফেব্রুয়ারী মাসে কিডনি চক্রের পান্ডা পার্থ চৌধুরীকে কলকাতার গোয়েন্দা পুলিশ বাংলাদেশ সংলগ্ন সন্দেশখালি থেকে আটক করে। পার্থ বাংলাদেশেও তার চক্রের কথা স্বীকার করে। এঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার কিডনি প্রতিস্থাপনে কড়াকড়ি আরোপ করে। ফলে চক্রটি এখন বাংলাদেশে তাদের ব্যবসা বিস্তার করছে। এসব বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. হুমায়ন কবির বুধবারকে বলেন, কিডনি ক্রয় বিক্রয় পুরোপুরি অবৈধ। এ ধরনের কোন কর্মকান্ড চালাতে কেউ চেষ্টা করলে বা কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
অনুসন্ধানে দুই শ্রেণীর কিডনি দাতা পাওয়া গেছে। এদের প্রথম অংশটি হলো বেকার তরুন। কিছু অর্থ দিয়ে একটি ছোটখাটো ব্যবসা করে জীবন কাটিয়ে দেয়ার আশায় এরা কিডনি বিক্রি করছেন। অন্য অংশ সব কিছু হারিয়ে অসহায় হয়ে কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এই দু শ্রেনীর দাতারাই এখন দালালদের মাধ্যমে কিডনি বিক্রি করছেন। মানুষের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিক্রিতে আইনী বাধা থাকায় তারা দালাল ধরতে বাধ্য হন। দালালরা সহজেই নোটারী পাবলিক ও ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছ থেকে সম্পর্ক নির্ধারনের একটি সনদ যোগাড় করে দেয়।
আইনে যা আছে
১৩ এপ্রিল ১৯৯৯ সালে মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন করা হয়। এতে বলা হয়েছে- সুস্থ ও সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন যে কোন ব্যক্তি তার দেহের এমন কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যা বিযুক্তির কারণে তার স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ব্যাঘাত সৃষ্টির আশংকা নেই তা কোন নিকট আত্মীয়ের দেহে সংযোজনের জন্য দান করতে পারবেন। “নিকট আত্মীয়” বলতে পুত্র, কন্যা, পিতা, মাতা, ভাই, বোন ও রক্ত সম্পর্কিত আপন চাচা, ফুফু, মামা, খালা ও স্বামী-স্ত্রী বুঝানো হয়েছে। এর বাইরে কেউ কাউকে কিডনি বা অন্যান্য অঙ্গ দান করতে পারবেননা। আইনে “অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ” অর্থ মানবদেহের কিডনী, হৃৎপিণ্ড, যকৃত, অগ্নাশয়, অস্থি, অস্থিমজ্জা, চু, চর্ম ও টিস্যুসহ মানবদেহে সংযোজনযোগ্য যে কোন অঙ্গ বোঝানো হয়েছে। আঠার বছরের কম ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সের কোন ব্যক্তি অঙ্গ দান করতে পারবেননা। তবে রিজেনারেটিভ টিস্যুর ক্ষেত্রে দাতা ও গ্রহীতা ভাই-বোন সম্পর্কের হলে এ শর্ত কার্যকর হবে না। আর গ্রহীতাকে দুই বছর হতে সত্তর বছর বয়সের মধ্যে হতে হবে। এদের মধ্যে পনের বছর হতে পঞ্চাশ বছরের ব্যক্তিরা অগ্রাধিকার পাবেন। আইনে বলা হয়েছে-মানব দেহের যে কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্রয়-বিক্রয় বা এর বিনিময়ে কোন প্রকার সুবিধা লাভ এবং সেই উদ্দেশ্যে কোন প্রকার বিজ্ঞাপন প্রদান বা অন্য কোনরূপ প্রচারণা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কোন ব্যক্তি এই আইনের কোন বিধান লংঘন করলে অথবা লংঘনে সহায়তা করলে তিনি অনুর্ধ্ব সাত বছর এবং অন্যুন তিন বছর মেয়াদী সশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অন্যুন তিন ল টাকা অর্থদণ্ডে অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আর কোন চিকিৎসক এই আইনের কোন বিধান লংঘন করলে বা লংঘনে সহায়তা করিলে তিনিও এ বর্ণিত দণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং এছাড়াও চিকিৎসক হিসাবে তার রেজিস্ট্র্রেশন বাতিলযোগ্য হবে।
এছাড়াও এ আইনে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দাতা ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ ও টিস্যু টাইপসহ সকল প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে একটি রেজিস্টার সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বেকারত্ম্য ঘোচাতে কিডনি বিক্রি
বিএসএমএমইউতে বিজ্ঞাপনদাতা ০১৯২১১৩১৪৭৫৯ নম্বরধারী রকিবের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের সাক্ষাতে কথা হয়। তিনি তার বাড়ি রংপুর শহরের চিড়িয়াখানা সংলগ্ন বলে জানান। তিনি ডেভলাপার কোম্পানী ডম ইনোর একজন ইলেক্ট্রেশিয়ান। তার কিডনি বিক্রি সম্পর্কে পরিবারের কেউ জানেনা বলে ছবি তুলতে রাজি হননি। রকিব বাবা মায়ের একমাত্র পুত্র। তার আরেকটি বোন রয়েছে। রকিব বয়স ২০ বছরের যুবক। দেখতে স্মার্ট রকিব জানান, আমার মেসের একজন কিডনি দিয়ে বেশকিছু অর্থ পেয়েছেন। তিনি পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন। গ্রহীতা প প্লাস্টিক সার্জারী করে দেয়ায় তার শরীরে কোন দাগও নেই। তিনি কিডনি বিক্রির অর্থে ব্যবসা করেছেন। বিয়ে করে ঘর সংসার করছেন। তার একটি নিশ্চিত জীবন দেখে আমিও কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেই। এজন্য প্রায় পাঁচ’শ টাকা দিয়ে দুইশ স্টিকার ছাপিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে লাগিয়ে দেই। কয়েকটি পরে সঙ্গে তার রফাও হয়। তবে রোগী মারা যাওয়ায় আর বিক্রি করা যায়নি। রাকিব জানায়, অনেকে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টাকালে নিজের জীবন হারিয়ে ফেলেন। এর চেয়ে কিডনি বিক্রি করে আয় করা অনেক সহজ। কেউ জানতে পারেনা। এ কারণেই তরুনেরা কিডনি বিক্রির দিকে ঝুকছেন। ০১৮১৭০৪১৫৬৩ নম্বরধারী শামিমও কিডনি বিক্রি করতে চেয়ে একটি বিজ্ঞাপন দেন। তিনি এমবিএ উত্তীর্ণ। একটি ভালো চাকরি না পাওয়ায় কিডনি বিক্রি করে বিদেশে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। শামিম বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর আর্থিক ও মানসিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এ কারণে কিডনি বিক্রির জন্য চেষ্টা করি। তবে একটি বায়িং ফার্মে চাকরি পাওয়ার কারণে বিষয়টি বাদ দিয়ে দিয়েছি। এ লাইনে যাওয়ার পর দেখেছি, পরিবারের সঙ্গে অনেক দিন ধরে বিচ্ছিন্ন তরুনেরাই হতাশ হয়ে কিডনি বিক্রি করে দিচ্ছে। কারো চাকরি না থাকলে পরিবারের কাছে তাকে প্রতিনিয়ত হেয় হতে হয়। নিজের জীবনের প্রতি বিরক্তি জন্মে তার। এ কারণেই কিডনি বিক্রি করে এর একটি আপত সমাধান খোজার চেষ্টা করে তারা। মানসিক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুহিত কামাল বুধবারকে বলেন, আমার কাছে অনেক হাসপাতাল থেকে কিডনি দাতাকে কাউন্সেলিংয়ের জন্য পাঠানো হয়। তারা যেন কিডনি দেয়ার পরবর্তী স্তরে মানসিকভাবে এটিকে গ্রহণ করতে পারেন। তবে তারা গ্রহীতাকে নিজেদের আত্মীয় বলেই পরিচয় দেন।
দালালদের দৌরাত্ম্য
কিডনি বেচাকেনার সঙ্গে জড়িতদের সাত বছর থেকে তিন বছরের শাস্তির কথা বলা থাকলেও তা দমাতে পারেনি দলালদের। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঘিরে এ চক্র সক্রিয় রয়েছে। অসহায় যে মেয়েটির কথা বলে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে সেই মেয়টির সঙ্গে দেখা করা যায়নি। অনেক গোপনে ধূর্ততার সঙ্গে কাজ করতে চায় পটি। ওই ফোন নম্বরধারী নিজেকে তার ভাই বলে পরিচয় দেন। বলেন, আগে কথাবার্তা পাকা করে দাতার সঙ্গে দেখা করানো হবে। এছাড়া সম্ভব নয়। একসময় প্রতিবেদকের পরিচয় জানতে পেরে তিনি জানান, ওই মেয়েটির এখন আর কিডনি বিক্রি বা সাহায্যের দরকার নেই। প্রতিবেদকের সঙ্গে সাইফুল্লাহ নামের আরেক দালালের সঙ্গে কথা হয়। তার মোবাইল নম্বর ০১৯১১৪১৮৫৯৬। তিনি প্রতিবেদককে তার ঠিকানা প্রযত্নে- মজিবর রহমান ঠিকাদার, মেরকুন মোল্লার গেরেজ, স্টেশন রোডের ঠিকানায় যেতে বলেন। তিনি জানান, এ পর্যন্ত একশ ৩৫ টি কিডনি বিক্রিতে মধ্যস্থতা করেছি। আমার কাছে অনেক কিডনি দাতার এইচএলএ রিপোর্ট ও টিস্যু টাইপিন করা আছে। রোগীর সঙ্গে দাতার কাগজপত্র মিলে গেলে সঙ্গে সঙ্গেই কিডনি দেয়া হয়। তিনি জানান, ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছ থেকে আত্মীয়তার প্রত্যায়নপত্র আনার দায়িত্বও তার। তবে কিডনি প্রতি দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা দিতে হবে। এর মধ্যে পরীক্ষা নিরীক্ষার খরচও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তিনি কিডনি ফাউন্ডেশনে কিডনি প্রতিস্থাপন করান বলে জানান। ০১৯২২০২৫৬১৭ ও ০১৭১১১৬০৮৭৬ নম্বরধারী ধানমন্ডির বাসিন্দা কবির হোসেনও কিডনি বিক্রিতে মধ্যস্থতা করেন। তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, আইনের দৃষ্টিতে কিডনি বেচাকেনা অবৈধ এটা জানি। তারপরও আমরা মানুষের উপকার করি। কিডনি ম্যানেজ করে দেই। আমরা সরাসরি মক্কেলের কাছে ধরা দেইনা। যিনি কিডনি বিক্রি করবেন তাকে পাঠাই। আমাদের কাছে সব গ্রুপের কিডনি এইচএলএ ও টিস্যু টাইপিন করা রয়েছে। আসলেই সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যাবেন। তিনি চিকিৎসকদের ম্যানেজ করে কাজ করতে পারেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান। তিনি জানান, এইচএলএ করতে বিএসএমএমইউতে সাড়ে চার হাজার, বারডেমে সাড়ে পাচ হাজার ও ল্যাব এইডে বারো হাজার টাকা লাগে। আর প্রতিস্থাপনে বিএসএমএমইউতে একলাখ ৬০ হাজার টাকা, কিডনি ফাউন্ডেশনে আড়াই লাখ টাকা, বারডেম হাসপাতালে সড়ে তিন লাখ টাকা ও ইউনাইটেড হাসপাতালে সাড়ে ছয় লাখ টাকা লাগে। কোথায় অপারেশন করবেন তা আপনার ব্যাপার। তবে যেকোন জায়গায় যে কোন দাতার কিডনি স্থানান্তরের কাজ করি। এ পর্যন্ত শতাধিক কিডনি প্রতিস্থাপনে মধ্যস্থতা করেছি।
দালালদের খপ্পরে পড়ে সর্বহারা বিপ্লব
অভাব আর দেনার ভারে প্রথমে চোখ দান করতে চেয়েছিলেন নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজার গ্রামের বিমল চৌধুরীর পূত্র বিপ্লব চৌধুরী। চেয়েছিলেন এ চোখ দিয়ে আর কান্না নয়। বিক্রি করে কিছু অর্থ দরকার। কিন্তু নিজেই চোখে চশমা পড়েন বলে তা সম্ভব হয়নি। পরে চেষ্টা করেন কিডনি দিয়ে হলেও দেনা থেকে মুক্ত হতে। কিন্তু দালালদের কবলে পড়ে একেবারে সর্বশান্ত হন তিনি। এরপর ভিটেমাটি হারিয়ে শেষে এলাকা ছাড়তেও বাধ্য হন তিনি। বর্তমানে তিনি রূপসী গ্রামের মইকুলি বাজারের প্রতীক ফটোগ্রাফার্স সংলগ্ন আব্দুল আজিজের বাড়িতে থাকেন। এ বাড়িতে বসেই নিজের জীবনের দুর্ভাগ্য আর অসহায়ত্বের কথা জানান। বিপ্লব চৌধুরীর একজন অলংকার শিল্পী। একসময় সবই ছিল তার। আড়াই হাজারের কল্যাণদি বাজারের সেন জুয়েলার্সের মালিক ছিলেন তিনি। একপর্যায়ে একজন ব্যবসায়ীর কন্যার বিবাহ অনুষ্ঠানের জন্য তৈরী ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে তার পূত্র ছিনতাইয়ের শিকার হন। এজন্য সাড়ে সাত লাখ টাকা জরিমানা দিতেই তিনি দোকান ও ভিটেমাটি বিক্রি করতে বাধ্য হন। এক পর্যায়ে কিডনি বিক্রির জন্য দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় ২০০৬ সালের ২৬ ফেব্র“য়ারী বিজ্ঞাপন দেন। এরপরেই তিনি দালালদের হাতে পড়েন। দালালরা তাকে দিয়ে আমার দেশ প্রত্রিকায় ২৫ টি ও ইত্তেফাক পত্রিকায় সাতটি বিজ্ঞাপন ছাপায়। তবে হিন্দু নাম থাকায় সাড়া কম হয়। একপর্যায়ে নিজের নাম পাল্টে হোসেন মোহাম্মদ সৌরভ রাখেন। এতে কাজ হয়। অনেক সাড়া আসে। মিল্কভিটার একজন সাবেক পরিচালকের সঙ্গে তার পাকাপাকি চুক্তি হয়। কিন্তু দালালরা ওই রোগীর কাছে থেকে অর্থ আদায়ের ফন্দি আটে। পুলিশের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করতে গেলেই ওই রোগী তাকে না করে দেন। বিপ্লব চৌধুরী বলেন, হাতে অর্থ নেই চাকরি নেই। শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর আগে সন্তানদের জন্য একটি কূল করে যাওয়া আর দেনা মিটিয়ে দেয়ার জন্য কিডনি দানের সিদ্ধান্ত নেই। দুর্ভাগ্য রোগীর ফোন না পেয়ে পেলাম কিছু দালালের ফোন। একজন দালাল প্রথমেই আমাকে রাজধানীর একটি নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এরপর একের পর এক দালালের পাল্লায় পড়ে আমার জীবনই শেষ হয়ে যেতে বসেছিল। এর মাঝে কয়েকজন রোগী পেলেও দালালেরা তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতে চাইলে তারাও সরে যান। আমর টিস্যু টাইপিন, এইচএলএ, শরীর চেকআপ করায়। সব মিলিয়ে আমার ৪০ হাজার টাকাও শেষ হয়ে যায়। এ টাকাও দেনা করেছিলাম। ভাবলাম কিডনির বিনিময়ে কিছু পেলে দেনা শোধ করবো। এক পর্যায়ে আর কিছুই করার ছিলনা। দুই টাকার মুড়ি কিনে চারজনে খেয়ে দিন কাটাই। এর মধ্যে পাওনাদারদের হুমকী তারা মেরে ফেলবে। অভাবের কারণে আত্মীয় স্বজনরাও আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। বাধ্য হয়ে বাড়ি বিক্রি করে দেই। চার হাতপায়ে চলে আসি রুপসী এলাকায়। এখনও এক লাখ ৭০ হাজার টাকার মতো দেনা রয়েছি। অনেক দিন পর একটি নাইট গার্ডের চাকরি পোয়েছি। মাস শেষে আড়াই হাজার টাকা বেতন পাই। এর মধ্যে ঘরভাড়ায়ই আটশ টাকা চলে যায়। এ টাকায় চারজনের দিন চলেনা। কোনমতে খেয়ে না খেয়ে বেচে আছি। কেউ আমাকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করলে আমার জীবনটা বেচে যেত।
সরজমিনে বেআইনী কিডনি স্থাপনের প্রমাণ
এ প্রতিবেদক রাজধানীর তিনটি হাসপাতালে গিয়ে বেআইনী কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রমাণ পান। বিএসএমএমইউতে এটি এখন ওপেন সিক্রেট। কোন রোগীর কিডনি প্রয়োজন হলেই তার সংবাদ দালালদের কাছে ছড়িয়ে পড়ে। রোগীর আত্মীয়দের কাছেই অফার চলে আসে। আফোষ হলেই কিডনি দাতাকে আত্মীয় হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। চিকিৎসকরা এসব বুঝতে পারলেও তারা এটি এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করেন। কারণ কিডনি স্থানান্তর মানেই এক লাখ ৬০ হাজার টাকা পাওয়া যায়। এছাড়াও রোগীকে আরও ৫০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। গত ৭ অক্টোবর এ হাসপাতলের কিডনি রোগ বিভাগে গিয়ে দেখা গেলো- বিনা বর্মন নামের একজন রোগীর দেহে কয়েকদিন আগে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তিনি কুমিল্লার মনছুরপুরের বাসিন্দা। তার স্বামী সুব্রত দাশের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, বিনার চাচাতো ভাই তপন বর্মন কিডনি দান করেছেন। এটা বেআইনী স্মরণ করিয়ে দিতে তিনি বলেন, এ আনি যারা করেছেন তাদের আত্মীয় স্বজন এ রোগে পড়লে বুঝতে পারবেন। চোখের সামনে একজন স্বজন মরে যাবে। আর কিছু করার সুযোগ থাকলে কেউ করবেনা তা ভাবা যায়না। সরকারের এটা বিবেচনা করা উচিত। এ বিষেয়ে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুল আলমের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি দুদিন ধরে এ প্রতিবেদকে সময় দিয়েও কথা বলেননি। গত ৭ অক্টোবর প্রতিবেদককে বসিয়ে রেখে পেছনের দড়জা দিয়ে বেড়িয়ে যান। এসময় তাকে অ্যাপয়েন্টমেন্টর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়। তিনি এতে প্রতিবেদকের সঙ্গে রেগে যান। বলেন, আপনার সঙ্গে কথা বলবোনা। এসময় তাকে প্রশ্ন করা হয়, এ বিভাগ ঘিরে দালাল ও বেআইনি কিডনি প্রতিস্থাপনের দায়ভার বিভাগীয় চেয়ারম্যান হিসেবে নিতে রাজি কিন? এর উত্তর না দিয়ে তিনি চলে যান।
গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে গত ২ অক্টোবর গিয়ে দেখা গেল আইসিইউতে মিজানুর রহমান নামে একজন রোগী রয়েছেন। তার দেহে সম্প্রতি কিডনি স্থাপন করা হয়েছে। তার দাতার নাম তৌহিদ। তাকে হাসপাতালের ৩৩১ নম্বর কেবিনে রাখা হয়েছে। তৌহিদ জানান, মিজানুর রহমানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকায় তিনি কিডনি দান করেছেন। তবে রোগী তার দূর সম্পর্কের মামা বলেও তিনি দাবী করেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক অধ্যাপক নুরুল ইসরামের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তার বিভাগের কর্মচারীরা দেখা করতেও দেননি। বলেন, স্যার কোন কথা বলেননা। এ বিষয়ে ডা. ফারুকই আলম কথা বলবেন। তার জন্য অনেকণ অপো করে প্রতিবেদককে ফিরে যেতে হয়েছে। পরে নূরুল ইসলামের ইমেইল ঠিকানায় এর বিষয়ে তার বক্তব্য চেয়ে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। তিনি এর কোন উত্তর দেননি।
ধানমন্ডি ৮ এর বাড়ি নং ৬ এ অবস্থিত কিডনি ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে চেয়ারম্যান অধ্যাপকসহারুন অর রশীদের বক্তব্যের জন্য এ প্রতিবেদক সরজমিনে গিয়ে যোগাযোগ করে। সেখানে টঙ্গীর দালাল সাইফুল্লাহর সঙ্গে দেখা হয়। তিনি অন্য একজন কিডনির রোগীর সঙ্গেই সেখানে যান। তবে হারুন অর রশীদ বিদেশে থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার পে ডা. রুহুল আমিন রুবেল বলেন, এখানে মা তার সন্তানকে কিডনি দিলে নোটারী পাবলিকই যথেষ্ট। আমরা সম্পর্ক নির্ধারনের ক্ষেত্রে এখন ম্যাজিষ্ট্রেটের সত্যায়নপত্র বাধ্যতামূলক করেছি। ম্যাজিষ্ট্রেট যদি বলেন, দাতা গ্রহীতা ভাই সম্পর্কের হন তাহলে আমাদেরতো কিছু করার নেই। আরেক চিকিৎসক ডা. আরাফাত বলেন, আইনে তো ডিএনএ টেস্ট করার কথা বলা হয়নি। এ কারণে আমাদের দেষ দিতে পারেননা।
রোগীর সঙ্গে বাড়ছে কিডনি বিকিকিনি
জাতীয় কিডনি রোগ ইনস্টিটিউটের হিসেবে ২০০৫ সাল থেকে এ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে আট’শ ৭৫ জন রোগীর দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশে ৫৭৪ জন এবং বিদেশে তিন’শ একজন রোগী তাদের দেহে কিডনি প্রতিস্থান করেছেন। এদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন’শ ৪৭ জন কিডনি ফাউন্ডেশনে এক’শ ৩৪ জন, বারডেম হাসপাতালে ৪১ জন, জাতীয় কিডনি রোগ ইনস্টিটিউটে ১২ জন, আল মারকাজুল হাসপাতালে ১৫ জন, এ্যাপোলো হাসপাতালে নয় জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ১৪ জন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুইজন রোগীর দেহে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। জানা গেছে, দেশে ১৯৮৮ সালে তৎকালীন পিজি হাসপাতালে অনিয়মিতভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু হয়। ১৯৯২ সাল থেকে প্রতি শনিবার নিয়মিতভাবে একজন রোগীর দেহে কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। কিডনি ফাউন্ডেশনে প্রতি সোমবার একজন রোগীর দেহে কিডনি প্রতিস্থাপিত হচ্ছে। প্রতিদিনই কিডনি রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও কিডনি ফাউন্ডেশনের জরিপ মতে, ১০ বছর আগে কিডনি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি। বর্তমানে এর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২ কোটি। দেশের শতকরা ৪০ ভাগ নেফ্রাইটিসের কারণে, ডায়াবেটিসের কারণে ২৪ ভাগ ও উচ্চ রক্তচাপের কারণে ১৫ ভাগ রোগীর কিডনি অকেজো হয়। আর এ সুযোগে কিডনি প্রতিস্থানের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে দালালদের দৌরাত্ম। বিএসএমএমইউর অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম বলেন, একজন মানুষের দুটো কিডনি থাকে। স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে গেলে এর একটি কিডনিই যথেস্ট। এ কারণেই কিডনি দান করতে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। এখনআর আগের মতে দাতার ভয় নেই। কারণ তারা দেখছে ১৯৮৮ সালে কিডনি দেয়া ব্যক্তিও ভালো আছেন।
তবে চিকিৎসকরা বলছেন, দেশে মৃত ব্যক্তির কিডনি প্রতিস্থাপন করা শুরু হলেই দালালদের প্রভাব কমবে। মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে কিডনি ৫ থেকে ২০ ঘণ্টা সংরণ করা গেলে কিডনি অকেজো দেহে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের ব্রেন ডেথ (মস্তিষ্কে মৃত্যু) কমিটি গঠন এবং ঢাকার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ অরগান প্রকিউরমেন্ট কমিটি (অঙ্গ ক্রয় কমিটি) গঠন করা। এই কমিটি ব্রেন ডেথ (মস্তিষ্কে মৃত্যু) ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর নিকটাত্মীয়কে অঙ্গ দানে সম্মত করে তা ক্রয় করে তা সংরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এবং উপযুক্ত হাসপাতালে তা পৌঁছে দেবে। এ পদ্ধতি কার্যকর করা গেলে হাজার হাজার কিডনি অকেজো রোগী নতুন জীবন ফিরে পাবে আর এ ব্যবসাও বন্ধ হবে।


খাদ্য নিরাপত্তার ঝুকিতে বাংলাদেশ
এম এম মুসা

 বেশ কিছু দিন ধরে দেশে চালের দাম বৃদ্ধির প্রবনতা দেখা যাচ্ছে। বিশ্ব বাজারে দাম বৃদ্ধি এবং দেশে উৎপাদন সংকটের কারনে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিতে চাইছে। অন্যদিকে সরকার বাস্তব অবস্থাকে আমলে না নিয়ে সংকটকে সাময়িক বলে পার পাওয়ার চেষ্ঠা করছে। সরকার বলছে চালের যোগানের কোন ঘাটতি নেই তাদের হাতে পর্যাপ্ত চাল মজুদ আছে। কিন্তু সরকারের হাতে আছে মোট চাহিদার মাত্র ৮ থেকে ১০ শতাংশ। বাংলাদেশকে প্রতি বছর খাদ্য নিরাপত্তার অংশ হিসাবে ৩০ থেকে ৫০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য আমদানী করতে হয়। বন্যা খড়া প্রভৃতি প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে এ বছর দেশে চালের উৎপাদন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কম হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আফ্রিকা, এশিয়াসহ পৃথিবীর সব জায়গায় বন্যা খরা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে এবার খাদ্যশস্য উৎপাদন মারাতœক ব্যাহত হয়েছে। বিশ্ব বাজারে চালের মূল্যের উর্ধ্বমুখীতার জন্য চাল রপ্তানীকারক দেশ ভারত, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, সহ অন্যান্য দেশ গুলি চাল রপ্তানী বন্ধ করে দিয়েছে। পর্যাপ্ত মজুদ থাকা স্বত্তেও দেশ গুলি মূল্য বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলার জন্য অতিরিক্ত মজুদ গড়ে তুলছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভুমিকা ভিন্ন। বাংলাদেশ সরকার বৈষয়িক এবং দেশের খাদ্য উৎপাদন বিষয়কে আমলে না নিয়ে সংকটকে সাময়িক হিসাবে আখায়িত করছে। বর্তমানে বিশ্ব বাজারে চালের দাম টন প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ ডলার অন্যদিকে বাংলাদেশে দাম মাত্র ৩০০ থেকে ৩৫০ ডলার। এমতাবস্থায় যদি দেশে কোন রকম খাদ্য সংকট দেখা দেয় তাহলে সরকারকে বিশ্ব বাজার হতে চড়া দামে চাল আমদানী করতে হবে। এছাড়া দেশের ব্যবসায়ীরা যেকোন সময়ে বিশ্ব বাজারের দোহাই দিয়ে চালের দাম বৃদ্ধি করতে পারে। সেক্ষেত্রে সরকারের হাতে যে সব অস্ত্র আছে তা প্রয়োগ করে চিনির বাজারের মত চালের বাজারও নিয়ন্ত্রন করতে পারবে না। বোরো ধানের আবাদ ভাল হওয়ায় কৃষক এবং আরতদারদের কাছে কিছু পরিমান ধান রয়েছে পাশাপাশি চাল রপ্তানী বন্ধ থাকায় দেশের চালের দাম এখনও আন্তর্জাতিক বাজার হতে কম রয়েছে। এদিকে দেরিতে বৃষ্টি হওয়ায় আমনের আবাদকাজ সময়ের পরে শুরু হয়েছে। অন্যদিকে শীতকাল ঘনিয়ে আসছে ঠিকমত রোদ না পাওয়া গেলে আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না।  আমন ধানের ফলন কম হলে দেশে ধানের চাহিদা অনুযায়ী যোগান থাকবে না সেক্ষেত্রে চালের দাম বেড়ে যাবে। অন্যদিকে জাতিসংঘ এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ২০০৭ সালের খাদ্য সংকটের পর হতে বাংলাদেশকে সরাসরি খাদ্য সাহায্য প্রদান করে আসছিল কিন্তু এবার বৈষিক অর্থনৈতিক সংকটের কারনে বিনামূল্যে খাদ্য প্রদান কর্মসূচী ৬০ শতাংশ কমিয়ে এনেছে। পাশাপাশি পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় খাদ্য অপ্রতুলতা এবং দাম বৃদ্ধির কারনে সরাসরি খাদ্য না দিয়ে অর্থ দেয়ার পক্ষপাতি সংস্থা গুলি। দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন কম এবং বিশ্ব বাজারে চালের মূল্য বৃদ্ধির কারনে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে বিশেজ্ঞগন মনে করছেন। সম্ভাব্য খাদ্য সংকট এবং মূল্য বৃদ্ধির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ব্রাক এর নির্বাহী পরিচালক ড. মাহবুব হোসেন বলেন “ বিশ্ব বাজারে এখন গমের দাম দেশের গমের দাম হতে অপেক্ষাকৃত কম। চালের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে করে অদুর ভবিষ্যতে গমের দামও বৃদ্ধি পাবে। তাই সরকারের উচিৎ অনতিবিলম্বে গম ক্রয় করে মজুদ করা। যখন দেশে চালের দাম বৃদ্ধি পাবে সেই সময়ে দারিদ্র জনগনের মাঝে চালের পাশাপাশি গম বিতরনের মাধ্যমে খাদ্য সংকটের বেশ খানিকটা সমাধান করা সম্ভব।” তিনি আরো বলেন বর্তমানে বিশ্ব বাজারে সারের দাম দেশিয় বাজার হতে অনেক কম। অন্যদিকে কাঁচামালের সংকটের কারনে দেশে সারের উৎপাদন চাহিদার তুলনায় কম হচ্ছে । এমতবস্থায় সরকারের উচিৎ বেশি করে সার ক্রয় করে মজুদ করে রাখা এবং মৌসুমের সময় কৃষকেদের কাছে পর্যাপ্ত সার পৌছানোর ব্যবস্থা করা যাতে করে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে বাংলাদেশে একর প্রতি ধানের উৎপাদন মাত্র দশমিক ৭ মেট্রিক টন পক্ষান্তরে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে এই হার ২ মেট্রিক টন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবকে ধরে নিয়েই আমাদেরকে আরো বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে।

বোরো ধানের উৎপাদন বেশি হলেও কৃষকরা ঠিকমত দাম না পাওয়ার কারনে ধান উৎপাদনে কিছুটা ভাটা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হচ্ছে ধানের দাম ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে রাখা। পাশাপাশি সেচ, সার, বীজ প্রভৃতি সঠিক সময়ে কৃষকের কাছে পৌছাতে হবে। ড. মাহবুব হোসেনও ধানের দাম বেশি রাখার পক্ষে কারন ধানের উৎপাদন বাড়াতে হলে কৃষকদের ধান চাষে উৎসাহীত করতে হবে এর জন্য প্রয়োজন প্রনোদণা প্যকেজ। ধানের দাম বৃদ্ধিই হতে পারে এই প্রনোদণা প্যাকেজ। শুধু ধানের দাম বৃদ্ধি নয় দাম বৃদ্ধির সরাসরি সুফল প্রান্তিক চাষীর কাছে পৌছায় তার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানান তিনি। বেশির ভাগ সময় দেখা যায় ধানের দাম বৃদ্ধির সুফল ভোগ করে আরতদার, মজুদার ও মহাজনরা। এটা রোধ করার জন্য প্রয়োজন সরকারের সুষ্ঠ হস্তক্ষেপ। একদিকে চাল রপ্তানীকারক দেশ গুলি রপ্তানী বন্ধ করে দেয়ায় যে সংকট তৈরি হয়েছে তার সাথে যদি যোগ হয় উৎপাদনহানী তাহলে পরিস্থিতি জটিল হবে। বিশেষত অসাধু ব্যবসায়ীরা এই সুযোগে চিনির বাজারের মত চালের বাজারকেও অস্থিতিশীল করে তুলবে।  


৩৯ বছর হল বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ আজও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে নাই। এর জন্য বিগত সরকার, এনজিও এবং দাতাসংস্থা গুলির চরম ব্যার্থতার প্রমান পাওয়া যায়। মঙ্গা প্রবন এলাকার দিকে তাকালে আমরা দেখতে পারি মঙ্গা শুরু হলে বিভিন্ন সংস্থা ও সরকার খাদ্য সাহায্য প্রদান করে থাকে কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহন কর হয় না। সাম্প্রতিক এক গবেষণা হতে দেখা যায় যে মঙ্গা কবলিত চারটি জেলা- কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর ও নীলফামারীতে তিন লাখ ৩৪ হাজার ২৬৫টি পরিবার মৌসুমী বেকার থাকে। এ এলাকার এক লাখ ৮৮ হাজার ১৮১ পরিবারের খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া তিন লাখ ৫৭ হাজার ৭৫টি পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ এবং আট হাজার ৯৩টি পরিবার নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত। এসব পরিবারের জন্য সরকারে  উপযুক্ত কোন পুনর্বাসন কর্মসূচি নাই। যার ফলে প্রতিবছরই মঙ্গা নামক ভয়াবহ পরিস্থিতির স্বীকার হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ। গবেষনায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে মঙ্গা কবলিত এলাকায় সরকার অস্থায়ী ভিত্তিতে পরিচালিত দুস্থ জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য (ভিজিএফ) কর্মসূচিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪০ শতাংশ বেশি বিনিয়োগ করছে। অথচ দুস্থ জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচিতে মাত্র ৪৫ শতাংশ বিনিয়োগ করছে। এটা সরকারি কর্মসূচির একটি বৈষম্য। এসব কর্মসূচী প্রমান করে মঙ্গা এবং দারিদ্রতা দুর করার যথেষ্ট সদ্বিচ্ছার অভাব রয়েছে সরকার গুলির। সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলা করতে চাইলে সার্বিক অবস্থা বিবেচনা পূর্বক সরকারের উচিৎ অনতিবিলম্বে খাদ্য মজুদ এবং উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে নজর দেয়া।

খাদ্য নিরাপত্তার ঝুকিতে বাংলাদেশ
এম এম মুসা

 বেশ কিছু দিন ধরে দেশে চালের দাম বৃদ্ধির প্রবনতা দেখা যাচ্ছে। বিশ্ব বাজারে দাম বৃদ্ধি এবং দেশে উৎপাদন সংকটের কারনে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নিতে চাইছে। অন্যদিকে সরকার বাস্তব অবস্থাকে আমলে না নিয়ে সংকটকে সাময়িক বলে পার পাওয়ার চেষ্ঠা করছে। সরকার বলছে চালের যোগানের কোন ঘাটতি নেই তাদের হাতে পর্যাপ্ত চাল মজুদ আছে। কিন্তু সরকারের হাতে আছে মোট চাহিদার মাত্র ৮ থেকে ১০ শতাংশ। বাংলাদেশকে প্রতি বছর খাদ্য নিরাপত্তার অংশ হিসাবে ৩০ থেকে ৫০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য আমদানী করতে হয়। বন্যা খড়া প্রভৃতি প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে এ বছর দেশে চালের উৎপাদন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কম হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আফ্রিকা, এশিয়াসহ পৃথিবীর সব জায়গায় বন্যা খরা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারনে এবার খাদ্যশস্য উৎপাদন মারাতœক ব্যাহত হয়েছে। বিশ্ব বাজারে চালের মূল্যের উর্ধ্বমুখীতার জন্য চাল রপ্তানীকারক দেশ ভারত, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, সহ অন্যান্য দেশ গুলি চাল রপ্তানী বন্ধ করে দিয়েছে। পর্যাপ্ত মজুদ থাকা স্বত্তেও দেশ গুলি মূল্য বৃদ্ধি এবং সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলার জন্য অতিরিক্ত মজুদ গড়ে তুলছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভুমিকা ভিন্ন। বাংলাদেশ সরকার বৈষয়িক এবং দেশের খাদ্য উৎপাদন বিষয়কে আমলে না নিয়ে সংকটকে সাময়িক হিসাবে আখায়িত করছে। বর্তমানে বিশ্ব বাজারে চালের দাম টন প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ ডলার অন্যদিকে বাংলাদেশে দাম মাত্র ৩০০ থেকে ৩৫০ ডলার। এমতাবস্থায় যদি দেশে কোন রকম খাদ্য সংকট দেখা দেয় তাহলে সরকারকে বিশ্ব বাজার হতে চড়া দামে চাল আমদানী করতে হবে। এছাড়া দেশের ব্যবসায়ীরা যেকোন সময়ে বিশ্ব বাজারের দোহাই দিয়ে চালের দাম বৃদ্ধি করতে পারে। সেক্ষেত্রে সরকারের হাতে যে সব অস্ত্র আছে তা প্রয়োগ করে চিনির বাজারের মত চালের বাজারও নিয়ন্ত্রন করতে পারবে না। বোরো ধানের আবাদ ভাল হওয়ায় কৃষক এবং আরতদারদের কাছে কিছু পরিমান ধান রয়েছে পাশাপাশি চাল রপ্তানী বন্ধ থাকায় দেশের চালের দাম এখনও আন্তর্জাতিক বাজার হতে কম রয়েছে। এদিকে দেরিতে বৃষ্টি হওয়ায় আমনের আবাদকাজ সময়ের পরে শুরু হয়েছে। অন্যদিকে শীতকাল ঘনিয়ে আসছে ঠিকমত রোদ না পাওয়া গেলে আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না।  আমন ধানের ফলন কম হলে দেশে ধানের চাহিদা অনুযায়ী যোগান থাকবে না সেক্ষেত্রে চালের দাম বেড়ে যাবে। অন্যদিকে জাতিসংঘ এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ২০০৭ সালের খাদ্য সংকটের পর হতে বাংলাদেশকে সরাসরি খাদ্য সাহায্য প্রদান করে আসছিল কিন্তু এবার বৈষিক অর্থনৈতিক সংকটের কারনে বিনামূল্যে খাদ্য প্রদান কর্মসূচী ৬০ শতাংশ কমিয়ে এনেছে। পাশাপাশি পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় খাদ্য অপ্রতুলতা এবং দাম বৃদ্ধির কারনে সরাসরি খাদ্য না দিয়ে অর্থ দেয়ার পক্ষপাতি সংস্থা গুলি। দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদন কম এবং বিশ্ব বাজারে চালের মূল্য বৃদ্ধির কারনে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে বিশেজ্ঞগন মনে করছেন। সম্ভাব্য খাদ্য সংকট এবং মূল্য বৃদ্ধির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ব্রাক এর নির্বাহী পরিচালক ড. মাহবুব হোসেন বলেন “ বিশ্ব বাজারে এখন গমের দাম দেশের গমের দাম হতে অপেক্ষাকৃত কম। চালের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে করে অদুর ভবিষ্যতে গমের দামও বৃদ্ধি পাবে। তাই সরকারের উচিৎ অনতিবিলম্বে গম ক্রয় করে মজুদ করা। যখন দেশে চালের দাম বৃদ্ধি পাবে সেই সময়ে দারিদ্র জনগনের মাঝে চালের পাশাপাশি গম বিতরনের মাধ্যমে খাদ্য সংকটের বেশ খানিকটা সমাধান করা সম্ভব।” তিনি আরো বলেন বর্তমানে বিশ্ব বাজারে সারের দাম দেশিয় বাজার হতে অনেক কম। অন্যদিকে কাঁচামালের সংকটের কারনে দেশে সারের উৎপাদন চাহিদার তুলনায় কম হচ্ছে । এমতবস্থায় সরকারের উচিৎ বেশি করে সার ক্রয় করে মজুদ করে রাখা এবং মৌসুমের সময় কৃষকেদের কাছে পর্যাপ্ত সার পৌছানোর ব্যবস্থা করা যাতে করে উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে বাংলাদেশে একর প্রতি ধানের উৎপাদন মাত্র দশমিক ৭ মেট্রিক টন পক্ষান্তরে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে এই হার ২ মেট্রিক টন। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবকে ধরে নিয়েই আমাদেরকে আরো বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদনের দিকে নজর দিতে হবে।

বোরো ধানের উৎপাদন বেশি হলেও কৃষকরা ঠিকমত দাম না পাওয়ার কারনে ধান উৎপাদনে কিছুটা ভাটা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হচ্ছে ধানের দাম ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকার মধ্যে রাখা। পাশাপাশি সেচ, সার, বীজ প্রভৃতি সঠিক সময়ে কৃষকের কাছে পৌছাতে হবে। ড. মাহবুব হোসেনও ধানের দাম বেশি রাখার পক্ষে কারন ধানের উৎপাদন বাড়াতে হলে কৃষকদের ধান চাষে উৎসাহীত করতে হবে এর জন্য প্রয়োজন প্রনোদণা প্যকেজ। ধানের দাম বৃদ্ধিই হতে পারে এই প্রনোদণা প্যাকেজ। শুধু ধানের দাম বৃদ্ধি নয় দাম বৃদ্ধির সরাসরি সুফল প্রান্তিক চাষীর কাছে পৌছায় তার ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানান তিনি। বেশির ভাগ সময় দেখা যায় ধানের দাম বৃদ্ধির সুফল ভোগ করে আরতদার, মজুদার ও মহাজনরা। এটা রোধ করার জন্য প্রয়োজন সরকারের সুষ্ঠ হস্তক্ষেপ। একদিকে চাল রপ্তানীকারক দেশ গুলি রপ্তানী বন্ধ করে দেয়ায় যে সংকট তৈরি হয়েছে তার সাথে যদি যোগ হয় উৎপাদনহানী তাহলে পরিস্থিতি জটিল হবে। বিশেষত অসাধু ব্যবসায়ীরা এই সুযোগে চিনির বাজারের মত চালের বাজারকেও অস্থিতিশীল করে তুলবে।  


৩৯ বছর হল বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ আজও খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারে নাই। এর জন্য বিগত সরকার, এনজিও এবং দাতাসংস্থা গুলির চরম ব্যার্থতার প্রমান পাওয়া যায়। মঙ্গা প্রবন এলাকার দিকে তাকালে আমরা দেখতে পারি মঙ্গা শুরু হলে বিভিন্ন সংস্থা ও সরকার খাদ্য সাহায্য প্রদান করে থাকে কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহন কর হয় না। সাম্প্রতিক এক গবেষণা হতে দেখা যায় যে মঙ্গা কবলিত চারটি জেলা- কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর ও নীলফামারীতে তিন লাখ ৩৪ হাজার ২৬৫টি পরিবার মৌসুমী বেকার থাকে। এ এলাকার এক লাখ ৮৮ হাজার ১৮১ পরিবারের খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া তিন লাখ ৫৭ হাজার ৭৫টি পরিবার ঝুঁকিপূর্ণ এবং আট হাজার ৯৩টি পরিবার নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত। এসব পরিবারের জন্য সরকারে  উপযুক্ত কোন পুনর্বাসন কর্মসূচি নাই। যার ফলে প্রতিবছরই মঙ্গা নামক ভয়াবহ পরিস্থিতির স্বীকার হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ। গবেষনায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে মঙ্গা কবলিত এলাকায় সরকার অস্থায়ী ভিত্তিতে পরিচালিত দুস্থ জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য (ভিজিএফ) কর্মসূচিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৪০ শতাংশ বেশি বিনিয়োগ করছে। অথচ দুস্থ জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন (ভিজিডি) কর্মসূচিতে মাত্র ৪৫ শতাংশ বিনিয়োগ করছে। এটা সরকারি কর্মসূচির একটি বৈষম্য। এসব কর্মসূচী প্রমান করে মঙ্গা এবং দারিদ্রতা দুর করার যথেষ্ট সদ্বিচ্ছার অভাব রয়েছে সরকার গুলির। সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবেলা করতে চাইলে সার্বিক অবস্থা বিবেচনা পূর্বক সরকারের উচিৎ অনতিবিলম্বে খাদ্য মজুদ এবং উৎপাদন বৃদ্ধির দিকে নজর দেয়া।



 
NEED WAR
 
Foyez
 
একটা আকাশ সপে দিলাম
মেঘের কাছে আজ
কোথায় আমি পাবো এতো
কথার কারুকাজ।

কোন কথাটা বারে বারে
তোমায় দেবে নাড়া
কোন কথাতে পাবো আমি
বলো তোমার সাড়া।

কি দেখালে বলো তোমার
খুলবে জলের ভাঁজ
কোথায় আমি পবো এতো
কথার কারুকাজ।

আষাঢ় শ্রাবন খরায় কাটে
তোমার অভিমানে
তুমিই যে আজ জলের কনা
নেই বুঝি আর মনে।

ঝরো তুমি অঝোর ধারায়
শুকনো পাতার সাজ
একটা আকাশ সপে দিলাম
মেঘের কাছে আজ।
Need War
 
কেনরে তুই কথায় কথায়
মরিস এতো লাজে
মরুর বুকে ভীষন ক্ষরা
মন বসে না কাজে।

কথায় কথায় কেনরে তোর
এতা মধূর হাসি
হাসিতে তোর বেজে ওঠে
প্রেম-মধুর বাঁশি।

যখন তখন মগ্ন আমি
শুধু যে তোর মাঝে
মরুর বুকে ভীষন ক্ষরা
মন বসে না কাজে।


হঠাৎ হঠাৎ কেনরে তুই
থাকিস ভীষন রেগে
ঘুম কাতুরে এই আমিও
সময় কাটাই জেগে।

তোর অদেখায় দিনটা আমার
কাটে ভীষন বাজে
মরুর বুকে ভীষন ক্ষরা
মন বসে না কাজে।
Need War
 
একটু খানি স্নিগ্ধ আলো
জোৎসনা মাখা রাতে
চাঁদকে দেখি মেয়ে আমি
তোর রুপেরই সাথে

চাঁদকে বলি যা দূরে যা
চাঁদমেয়ে তুই থাক
হাত খানি তোর জ্বালতে আলো
এই ভূবনে রাখ

হাসরে মেয়ে, ভূবন জুড়ে
আলো ঝরুক তাতে
একটু খানি স্নিগ্ধ আলো
জোৎসনা মাখা রাতে
.......

মেঘকে ছুটি এই জীবনে
বলনা চাঁদের মেয়ে
মেঘ বিদায়ের পথে আছে
তোর পানে তাই চেয়ে

উপাসনার আলো জ্বলুক
চাঁদমেয়ে তোর সাথে
একটু খানি স্নিগ্ধ আলো
জোৎসনা মাখা রাতে
Need War
 
http://www.somewhereinblog.net/blog/foyez08
 
Today, there have been 1 visitors (1 hits) on this page!
Contact Email : ahammadfoyez@gmail.cm Cell- 01911 58 49 80 This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free