www.foyez.page.tl
   
 
  Interview

সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর সে প্রতিশ্র“তি থেকে সরে এসেছে

                                                   .....শাহদীন মালিক
দেশে অব্যাহতভাবে ক্রসফায়ারের নামে যা চলছে- এ বিষয়ে আপনার মত কি?
শাহদীন মালিক: দেশে ক্রসফায়ারের নামে যা চলছে তা হত্যাযজ্ঞ। তবে ক্রসফায়ার এই প্রথম নয়। এর আগে বিএনপি জোট সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় হয়েছে। আমরা প্রথম থেকেই বলে যাচ্ছি- এটি সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য। আগে




কদাচিৎ দু একটি ক্রসফায়ার হতো। আমরা তখন কিছুটা হলেও আমলে নেইনি। কিন্তু বর্তমানে ক্রমান্বয়ে এটা বেড়ে নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। এটা যেকোন গণতান্ত্রিক আইনের শাসন চলে এমন সভ্য দেশে অগ্রহণযোগ্য। এর চেয়ে আর কোন বেআইনী, অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ কাজ বর্তমান বিশ্বে নেই। দুনিয়ায় এরপর আরেকটি খারাপ কাজ হয়ে থাকে। তা হলো গণহত্যা।
বর্তমান সরকারী দল বিরোধী দলে থাকাকালে বিচার বহির্ভুত হত্যাকান্ডের বিরোধিতা করেছে। ক্ষমতায় আসার পরও বলেছিল এ ব্যাপারে তাদের জিরো টলারেন্স রয়েছে। তাদের নীতির এ পরিবর্তনকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
শাহদীন মালিক: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের ৫ এর ২ এ বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ করা প্রতিশ্র“তি রয়েছে। এর ভিত্তিতেই জনগন তাদের ভোট দিয়েছে। এখন স্পষ্টতই এ সরকার ক্ষমতায় যাওয়ার পর সে প্রতিশ্র“তি থেকে সরে এসেছে। রাজনীতিতে বিরোধী দলে থাকলে এক কথা আর ক্ষমতায় গেলে তার উল্টোটা করা হয়। লোকজন এর ভিত্তিতেই বলে, যার নেই কোন নীতি সে করে রাজনীতি। ১৯৭৩ সালের পর কোন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে এতবড় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ও জনসমর্থন নিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু সরকার এসব করে জনগনের কাছে গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে।
 কিন্তু পরিস্থিতি দেখে কি মনে হচ্ছেনা এর পেছেনে প্রচ্ছন্ন জনসমর্থন রয়েছে?
শাহদীন মালিক: আপত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে এর পেছনে জনসমর্থন রয়েছে। আসল কথা হলো সাধারণ মানুষ প্রথম দৃষ্টিতে কোন বিষয়ের ভুত ভবিষ্যৎ বুঝতে পারেনা। সব ব্যাপরে তাদের বিশেষ জ্ঞান থাকেনা। তাই তাদের কাছে মনে হতে পারে এটাই  বড় সমাধান। যানজটের কথাই বলি। প্রত্যেক লোকেরই নিজস্ব একটা সমাধান রয়েছে। এসব তো আসল সমাধান নয়। অনেক হিসেব নিকেষ করে বিশেষজ্ঞরাই এর সমাধান দিতে পারেন। আরেকটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। বিগত ১০/ ১৫ বছর আগেও লেখাপড়ার জন্য বেত মারার পক্ষেই জনসমর্থন ছিল। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরা মারধরের শিকার হয়েছে। সম্প্রতি আমরা বুঝতে পেরেছি যে বেত মেরে পড়াশুনা ভালো করা যায়না। এ বিষয়টি বুঝতে আমাদের একশ বছর লেগেছে।  অন্যদিকে ৮০’র দশক পর্যন্ত একটা ধারণা ছিল যে, সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নিলে দেশের সমস্যার সমাধান হয়। জনমনে এ ধারনার কারনেই পাকিস্থান আমলে আইয়ুব, ইয়াহিয়া এবং বাংলাদেশ আমলে অনেকে ক্ষমতায় এসেছে। অনেক ভোগান্তির পর লোকজন বুঝতে পেরেছে যে সামরিক শাসনে দেশের উন্নয়ন বা সমস্যার সমাধান হয়না। আমি ক্রসফায়ারকে বেত্রাঘাত বা সামরিক শাসনের পক্ষে ওই মানসিকতার ধরাবহিকতা হিসেবে দেখি।
ক্রসফায়ারের পর সরকারের তরফে একই ধরনের গল্প বলা হচ্ছে। এ গল্প আর কতদিন চলবে বলে মনে করেন?
শাহদীন মালিক: আসল কথা হলো এখন আর কেউ সরকারের ওই গল্প বিশ্বাস করেনা। এরপর সরকার মনে করবে গল্প বলারও দরকার নেই। তারা পুরো মানুষটিকেই গায়েব করে দেবে। অনেক সমাজে এটাই হয়েছে। সরাকরের বেতভুক ইউনিফর্ম পরিহিত লোকজন এভাবে নির্মমভাবে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড চালালে তার মানে কি দাড়াচ্ছে? রাষ্ট্র্র ফলাও করে বলছে আামদের আইন বিচার ব্যবস্থা কাজ করেনা। এরপর লোকজন সমস্যায় পড়লে বা অপরাধের শিকার হলে সরকারের মতো তারাও নিজের হাতে আইন তুলে নেবে। ইতোমধ্যে আমরা এর বহিপ্রকাশ সব জায়গায় দেখতে পাচ্ছি। ছিনতাইকারীকে গনপিটুনী মেরে ফেলা হয়- এ ধারনা থেকেই মারা হয় যে একে বিচারের মুখোমুখি করে লাভ নেই। বিচার বিভাগের ওপর আস্থাহীনতা থেকে তারা একাজ করছে। সরকারই যখন দেশের সবচেয়ে ঘৃন্য অপরাধিকে আইনেরে আওতায় নিয়ে বিচার করতে পারেনা তখন ছাত্র, শ্রমিক বা পথচারিদের মাথায় একই চিন্তা আসবে।
আইনের শাসনের সঙ্গে হেফাজতে মৃত্যুর অসঙ্গতি কেন? এর ব্যখ্যা কি?
শাহদীন মালিক : যখন একজন ব্যক্তিকে রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রযন্ত্রের আইন শৃংখলা বাহিনী হেফাজতে নিচ্ছে তখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সে কোন অন্যায় বা অপরাধ করলে আইনের মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত হলেই তার বিচার করা যাবে। এটাই আইনের শাসন ও গনতন্ত্র। এর ব্যতিক্রম হলে তা সংবিধান লংঘন হবে। কারণ সবিধানে আইনের আশ্রয় লাভের কথা বলা হয়েছে। রাজা বাদশাহর যুগের সঙ্গে গণতন্ত্রের প্রধান পার্থক্য হচ্ছে আগে তারা অপরাধিকে ধরে এনে শাস্তি দিতেন। আইনের শাসনে কেউ কাউকে ধরে এনে শাস্তি দিতে পরেনা। ধরার লোক আর শাস্তি দেয়ার লোক আলাদা করা হয়েছে। ধরার লোক হলো আইন শৃংখলা বাহিনী আর শাস্তি দেয় বিচার বিভাগ। এখন যারা ধরছে তারাই বিচার করছে। এর ফলে  আমরা মধ্যযুগে ফিরে যাচ্ছি। এই যদি হবে তাহলে বিচার বিভাগ কেন পৃথক ও স্বাধীন করলাম? ডিসি বা এসপির দায়িত্ব হবে অপরাধিকে ধরা। তারা যেন বিচার করতে না পারেন। আমরা কাগজ কলমে এটি পৃথক করলাম। কিন্তু ক্রসফায়ার দেয়ার কারণে তা প্রয়োগ হচ্ছেনা।
বলা হচ্ছে আইন শৃংখলা নিয়ন্ত্রনের জন্য ক্রসফায়ার চলছে। এটা রাষ্ট্রযন্ত্রের অন্যান্য বিভাগের ব্যর্থতার ফল কিনা?
শাহদীন মালিক: দেশে অবশ্যই আইন শৃংখলার সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যার সমাধানের জন্য সঠিক পথে না গেলে সমস্যা থেকেই যাবে। পুলিশ অপরাধিদের ধরছে। তবে সাক্ষ্য প্রমাণ দিয়ে এদের দোষী সাব্যস্থ করে শাস্তি দেয়া যাচ্ছেনা। এ প্রক্রিয়ায় সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর যে দুর্বলতা তার সমাধান না করেই সরকার পরিকল্পিতভাবে মানুষ মারার পথে নেমেছে। আমার দৃষ্টিতে প্রধান দূর্বলতা হলো আমাদের ফৌজদারী ব্যবস্থাটা এখনও চাক্ষুস সাক্ষীর ওপর নির্ভরশীল। খুন বা ডাকাতির শাস্তি দিতে হলে প্রত্যক্ষদর্শী পাঁচ জনের সাক্ষ্য দরকার হয়। বেশিরভাগ দেশ আরও ৫০ বছর আগেই বুঝেছে যে, ভয়ভীতি বা অলসতাসহ বিভিন্ন কারণে সাক্ষীরা আদালতে যাননা। ঘটনার পর দুই তিন বছর ধরে বিচার চলতে থাকে। এসময় সাক্ষি কোথায় থাকেন তার কোন ঠিক থাকে নাকি। এর সমাধানে অন্যান্য দেশে চাক্ষুষ সাক্ষীর ওপর থেকে নির্ভরশীলতাকে তুলে দিয়েছে। কিন্তু এদেশে সাক্ষীদের আদালতকে জানাতে হয় সে অস্ত্র দিয়ে আসামীকে গুলি করতে দেখেছে। এক্ষেত্রে ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা না থাকায় সাক্ষী হাজির না হলে প্রমাণ করা যায়না আসামী সত্যি গুলি করেছে কিনা। বিচার ব্যবস্থায় আমরা বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির ব্যবহারের দিকে নজর দিচ্ছিনা।  নুরুল ইসলাম আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার এক বছর পর কেমক্যিাল বিশেষজ্ঞ ওই  বাড়ি পরীক্ষা করতে গেছেন। এতদিন পরে কি কোন প্রমাণ থাকে? সারা দুনিয়ায় সরকারী আইনজীবীও একটি ক্যাডার। আর এদেশে নিজের দলের লোকজনের হালুয়া রুটির ব্যবস্থা করতে রাজনৈতিকভাবে অ্যাডহকের ভিত্তিতে সরকারী আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়। চাকরির কোন কাঠামো না থাকার ফলে জবাবদিহিতাও নেই। কেউ পদোন্নতি পাননা। একারণে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতাও তৈরী হয়না। এক সরকার চলে যাওয়ার পর আবার একই পন্থায় অন্যরা নিয়োগ পান। এতে সরকারের পক্ষে ফৌজদারী মামলা পরিচালনায় দক্ষ আইনজীবীর অভাব রয়েছে। ফলে অপরাধিরাও পার পেয়ে যাচ্ছে।
তাহলে ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থা পরোপুরি কার্যকর করতে না পারার কারণেই কি অপরাধিরা পার পেয়ে যাচ্ছে?
শাহদীন মালিক: অবশ্যই। আগে আদালতে ফৌজদারী মামলা করার প্রাথমিক একটি যাচাই বাছাইয়ের ব্যবস্থা ছিল। এখন পুলিশ মামলা নিয়ে গেলেই বিচারককে মামলা গ্রহণ করতে হচ্ছে। রাজনৈতিক কারণ ছাড়াও অন্যান্য কারণে যেকোন মামলাই করা সহজ হয়ে গেছে। এতে মিথ্যা মামলাও অনেক বেড়ে গেছে। একারণে বিচার ব্যবস্থাটাও ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েছে। ফৌজদারী কার্য বিধি ঠিকই আছে। এর কোন সংস্কারেরও দরকার নেই। যেটা দরকার ঘটনার সঙ্গে অপরাধির সম্পৃক্ততা প্রমাণ করতে হবে। আদালতে সুরতহাল রিপোর্ট দেয়া হয়। এর সঙ্গে কাঠ পেন্সিলে আঁকা একটি চিত্রও দেয়া হয়। যেখান লাশ পাওয়া গেছে তা চিহ্নিত করা হয়। মাপজোকে ঠিক না হলেই বিপক্ষের আইনজীবীরা তার খুত বের করে মামলা অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পান। আমার কথা হলো লাশসহ ওই স্থানের একটি ছবি তুললে কি অসুবিধা? দেশে প্রতিটি থানায় দুটো করে ক্যামেরা দিলেই এর সমাধান হয়। মান্ধাতা আমালের জিনিস দিয়ে বর্তমানে তো বিচার করা সম্ভব নয়। আইনে বড় দাগে কোন সমস্যা নেই। ছোটখাটো যেসব ত্র“টি রয়েছে তাকে বড় কোন সমস্যা মনে করছিনা। নকল করার সুযোগ থাকলেতো শিক্ষার্থীরা নকল করবেই। এই সুযোগ বন্ধ করতে হবে। সরকার এসব ব্যবস্থা না করে বরং ক্রসফায়ার দিয়ে মানুষ মারছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেক্রসফায়ার নিয়ে নিরবতার কি কারণ থাকতে পারে? অনেকেই একটি বিবৃতি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করতে চাইছে কেন?
শাহদীন মালিক: আমার মনে হয় রাজনৈতিক দলগুলোতে এসব ব্যাপারে জ্ঞান সম্পন্ন লোকের অভাব রয়েছে। সবাইকে বিশেষজ্ঞ হতে হবে এমনও কোন কথা নেই। বিদেশে দেখেছি- সংসদ সদস্যদেরকেও বুদ্ধি দেয়ার জন্য উপদেষ্টা থাকে। আামদের দেশে অল্প বিদ্যায় ভয়ংকরী অবস্থা হয়েছে। কিছু বুঝেই তারা মনে করেন দেশের সব সমস্যা সম্পর্কে তারা ভালো জানেন। একজন বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে উপদেশ নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে এমন অনুভবও তার করেননা। বঙ্গবন্ধু গভীর রাতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বসতেন। একটি জিনিস জানা ও বোঝার জন্য যে চর্চার দরকার তা রাজনৈতিক দলগুলো করছেনা। যারা চর্চা করে তাদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেনা। রাজনীতি যারা করেন কার বাড়িতে কয়টা বই রয়েছে? আসলে আমাদের সমাজে জ্ঞানের মূল্যটা কমে গেছে। এর  প্রতিফলনই ক্রসফায়ারের মাধ্যমে পড়ছে।
রাজনীদিবিদদের কথা বাদ দিলাম, সমাজের বুদ্ধিজীবীরা এ ধরনের হত্যাকান্ডের সক্রিয় কোন বিরোধিতা করছেননা কেন?
শাহদীন মালিক: আমার মনে হয় ফৌজদারী দিকটি যারা চর্চ্চা করছেন তাদের সংখ্যা কম। আমদের ফৌদারী বিচার ব্যবস্থা সম্পর্কে দেশে একটি বইও নেই। উকিলের জন্য বই রয়েছে। কিন্তু এর বাইরে অন্যদের বুঝার জন্য কোন বই লেখা হয়নি। আর অপরাধ বিষয়ে অনেকের অনাগ্রহ থাকতে পারে। যেমন আমি পরিবেশ আইন জানিনা বলে এ নিয়ে কথাও বলিনা।
বুদ্ধিজীবীদেরতো এ ব্যাপারটি অনুধাবন করার কথা।
শাহদীন মালিক: আমি বলতে চাই দেশে সংবিধান ও ফৌজদারী ব্যবস্থা নিয়ে চর্চ্চা করার লোকের সংখ্যা হয়ত কম। অনেকেই সমস্যাকে অনুধাবন করতে পারছেননা। ত্বড়িৎ সামধানের পথ খুজছেন।
দুএকটি পত্রপত্রিকা বা মানবাধিকার সংগঠন ছাড়া এর বিরুদ্ধে তেমন কোন প্রতিবাদ নেই কেন?
শাহদীন মালিক: পৃথিবীতে বড় গণহত্যাগুলো হয়েছে এ সবের প্রতিবাদ না করার কারণে। ছোট অপরাধ বড় অপরাধের জন্ম দেয়। স্টালিন ৫০’র দশকে ধনী কৃষকদের মারতে মুরু করলে কেউ কিছু বলেনি। এর পরিণতিটা কি হলো ? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনকোটি লোক মারা গেছে। ধরা হয় এর মধ্যে দুই কোটি ৭০ লাখ মানুষ সোভিয়েট ইউনিয়নের। জার্মানীতে হিটলার এসে প্রথম দু চারজন ইহুদী মারতে শুরু করলে কউে কিছু বলেনি। এর পরিণতিও হয়েছে ভয়াবহ। শেষ অবধি ৫০ থেকে ৬০ লাখ লোকের মৃত্যু হয়েছে। মাওসেতুংয়ের সময় সাংস্কৃতিক বিপ্লবে লোক মারা শুরু হলে তাতে দেশের উন্নতি হবে মনে করা হয়েছিল। ওই সাংস্কৃতিক বিপ্লব শেষ হয়েছে ২০ লাখ মানুষের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে। পলপট কম্বোডিয়ার ৭০ লাখ লোকের মধ্যে ২০ লাখ মানুষ মেরে ফেলে। পাকিস্থানী সেনাবাহিনীও এদেশে মানুষ মারা শুরু করেছিল ত্বড়িৎ সমাধানের জন্য। তারা মনে করেছিলো কিছু লোক মেরে পাকিস্থান ও ইসলামকে রক্ষা করা যাবে। পাকিস্থানীদের থেকে কেউ এর বিরোধীতা করেনি। এটা যে সম্ভব নয় তা বোঝার লোক ছিলনা। এভাবে দেশের বর্তমান হত্যাকান্ডের পরিনতিও আপনাকে আমাকে রক্ত দিয়ে দিতে হবে। আবার ঠিক জায়গায় আনতে অনেক প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।
হত্যাকান্ডের নায়কদের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে কিনা?  এটা কিভাবে করা উচিত?
শাহদীন মালিক: নিকট ভবিষ্যতে আমাদের আইন, বিচার ও রাজনীতির প্রেক্ষাপটে সম্ভব হবেনা। আমরা এর মধ্যেই অনেক ফ্রানকেনস্টাইন দানব তৈরী করে ফেলেছি।
বুধবার : তার মানে কি এরা আইনের গন্ডির বাইরে চলে গেছে?
শাহদীন মালিক: দানবের সৃষ্টিকর্তা মনে করে সে আমার কথামতো চলবে। গত ১০ বছরে কয়েকশ র‌্যাব পুলিশ যারা ঠান্ডা মাথায় মানুষ হত্যা করতে অভ্যস্থ হয়ে গেছে এদের নিয়ন্ত্রণ করার উপায় নেই। আমার আশংকা এরা যাদের সৃষ্টি তাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে। আমরা এর মধ্যেই দেরী করে ফেলেছি।
বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড, নির্যাতন এসব থেকে মুক্তির পথ কি? আর অপরাধ থেকে সমাজ কিভাবে মুক্তি পেতে পারে?
শাহদীন মালিক: কিছু বিষয়ে সমাজের সাধারণ লোকজন ত্বড়িৎ সমাধান চায়। কিন্তু অনেক বিষয়ের ত্বড়িৎ সমাধানকরতে গেলে হীতে বিপরীত হয়। হত্যা করে সমস্যা সমাধান করলে পুরো সমাজ হত্যার দিকে এগিয়ে যাবে। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি আর যদি ছয় মাস ক্রসফায়ার চলে অন্যান্য সমাজে যা হয়েছে তার আলোকে যানজটের জন্যই একজন আরেকজন গাড়িচালককে গুলি করে মারবে। এখনতো বিষয়টি গালাগালি ও চর থাপ্পরে মধ্যে সীমিত রয়েছে। আমরা বর্বর সমাজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। এর সমাধান আমি দেখতে পাচ্ছিনা।
আইনগতভাবে কি করা যায়? বিচার বিভাগ এটা প্রতিরোধে কি করতে পারে?
শাহদীন মালিক: কিছুই করার নেই। সম্পূর্ণ সিস্টেমকে না বদলালে এটা সম্ভব নয়। দুদিন পরপর বিডিআর সদস্যদের নির্যাতন করে মারা হচ্ছে। আমার আশংকা বিষয়টি রাষ্ট্রযন্ত্রের বাইরে চলে গেছে। এখন একমাত্র রাজনৈতিক নেতৃত্বই এর সমাধান করতে পারেন। আইন বা বিচার দিয়ে এর সমাধান হবেনা। রাজনৈতিক নেতৃত্ব  যদি বলেন কাল থেকে একটি ক্রসফায়ারও হবেনা তাহলেই এটা সম্ভব।
ক্রসফায়ার নিয়ে অনেক রিট উচ্চাদলতে ঝুলে রয়েছে। এর কি কারণ থাকতে পারে?
শাহদীন মালিক: এসব ক্ষেত্রে আদালত সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চায়। আর সরকারী আইনজীবী দাড়িয়ে সময় নেন। বিচার বিভাগের কি করার থাকতে পারে? আদালত বলতে পারে ম্যাজিষ্ট্রেকে দিয়ে তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়া হোক। ম্যাজিষ্ট্রে কি রিপোর্ট দেবে তা সবাই বোঝে। র‌্যাব পুলিশ বলবে আমরা কোন অন্যায় করিনি। এখন ক্রসফায়ারের যে গল্প বলছে তাইতো বলা হবে। আর আদালতের পক্ষে এ গল্পকে মিথ্যা প্রমাণ করাও সম্ভব নয়। আত্মরক্ষার্থে গুলির কাহিনীই শেষে সত্যি বলে প্রমানিত হবে। আইনজীবী হিসেবে নির্যাতনের বিরুদ্ধে রিট করেছি। হাইকোর্ট অনেক নির্দেশনা দিয়ে দিলো। এখন আইন শৃংখলা বাহিনী ও মন্ত্রীরা যদি একে বুড়ো আঙ্গুল দেখান তাহলে আদালত কি করতে পারে? সরকারের হাতে কুড়াল রয়েছে। সে নিজের পায়ে মারলে আমরাতো আটকাতে পারিনা।
আইনের প্রতি রাজনীতিবিদদের এ অবজ্ঞায় দেশ পরিচালনায় তাদের নৈতিক অধিকারের অবস্থান কি দূর্বল হচ্ছেনা?
শাহদীন মালিক: অবশ্যই দূর্বল হচ্ছে। তবে পরিত্রাণের উপায়ও তাদের হাতে। এর বাইরে অন্য কিছু ভাবার কোন সুযোগ নেই। রাজনীতিবিদরা যত তাড়াতাড়ি এটা বুঝবেন তাতে তাদের মঙ্গল হবে। আমি আশাবাদী তারা দ্রুত ভুল বুঝতে পেরে ক্রসফায়ার বন্ধের আদেশ দেবেন। এখনও অপরাধ নিয়ন্ত্রন সম্ভব। ল্যাটিন আমেরিকার ৫০ ভাগের একভাগ অপরাধও এদেশে হয়না। অপরাধিরাও প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শিখেনি। রাষ্ট্র আইন অনুযায়ী এদের বিচার করবে এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিলেই সমাধান সম্ভব।
বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের জন্য সরকারকে কোন দিন জবাদিহী করতে হবে বলে মনে করেন কিনা?
শাহদীন মালিক: অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। তা স্থানীয় পর্যায়ে না হলেও আন্তর্জাতিক  পর্যায়ে হবেই। কোন দেশে আইন থাকলেও তা না মেনে সরকার বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড করছে বলেইতো আন্তর্জাতিক ফৌজদারী আদালত হয়েছে। এর মধ্যে অনেক রাষ্ট্র প্রধানদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানাও জারী করা হয়েছে। দেশে এভাবে হত্যাকান্ড চললে ওই আদালতে আমাদের কথাও ওঠবে। বিলেতের আইনে সেদেশের আদালতেও এ নিয়ে মামলা করা যায়। হয়ত কোন নিহতের আত্মীয় সেখানে মামলা করতে পারেন। তারা বলতে পারেন দেশে বিচার পাচ্ছেনা বলেই এ আদালতে মামলা দেয়া হয়েছে। আপনারা এ সরকারের লোকজন গেলে তাদের আটক করবেন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো প্রতিদিনই ভেতরে ভেতরে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করছে। এটা সবার বুঝা উচিত।



NEED WAR
 
Foyez
 
একটা আকাশ সপে দিলাম
মেঘের কাছে আজ
কোথায় আমি পাবো এতো
কথার কারুকাজ।

কোন কথাটা বারে বারে
তোমায় দেবে নাড়া
কোন কথাতে পাবো আমি
বলো তোমার সাড়া।

কি দেখালে বলো তোমার
খুলবে জলের ভাঁজ
কোথায় আমি পবো এতো
কথার কারুকাজ।

আষাঢ় শ্রাবন খরায় কাটে
তোমার অভিমানে
তুমিই যে আজ জলের কনা
নেই বুঝি আর মনে।

ঝরো তুমি অঝোর ধারায়
শুকনো পাতার সাজ
একটা আকাশ সপে দিলাম
মেঘের কাছে আজ।
Need War
 
কেনরে তুই কথায় কথায়
মরিস এতো লাজে
মরুর বুকে ভীষন ক্ষরা
মন বসে না কাজে।

কথায় কথায় কেনরে তোর
এতা মধূর হাসি
হাসিতে তোর বেজে ওঠে
প্রেম-মধুর বাঁশি।

যখন তখন মগ্ন আমি
শুধু যে তোর মাঝে
মরুর বুকে ভীষন ক্ষরা
মন বসে না কাজে।


হঠাৎ হঠাৎ কেনরে তুই
থাকিস ভীষন রেগে
ঘুম কাতুরে এই আমিও
সময় কাটাই জেগে।

তোর অদেখায় দিনটা আমার
কাটে ভীষন বাজে
মরুর বুকে ভীষন ক্ষরা
মন বসে না কাজে।
Need War
 
একটু খানি স্নিগ্ধ আলো
জোৎসনা মাখা রাতে
চাঁদকে দেখি মেয়ে আমি
তোর রুপেরই সাথে

চাঁদকে বলি যা দূরে যা
চাঁদমেয়ে তুই থাক
হাত খানি তোর জ্বালতে আলো
এই ভূবনে রাখ

হাসরে মেয়ে, ভূবন জুড়ে
আলো ঝরুক তাতে
একটু খানি স্নিগ্ধ আলো
জোৎসনা মাখা রাতে
.......

মেঘকে ছুটি এই জীবনে
বলনা চাঁদের মেয়ে
মেঘ বিদায়ের পথে আছে
তোর পানে তাই চেয়ে

উপাসনার আলো জ্বলুক
চাঁদমেয়ে তোর সাথে
একটু খানি স্নিগ্ধ আলো
জোৎসনা মাখা রাতে
Need War
 
http://www.somewhereinblog.net/blog/foyez08
 
Today, there have been 7 visitors (28 hits) on this page!
Contact Email : ahammadfoyez@gmail.cm Cell- 01911 58 49 80 This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free